স্বৈরাচারের দোসর জালিয়াতি ঘুষ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান
স্বৈরাচারের দোসর জালিয়াতি ঘুষ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই, বিভিন্ন দপ্তরে প্রকাশ্য ঘুষের কারখানা খুলে বসেছেন, ঘুষ ছাড়া বিআরটিএর অধিকাংশ কার্যক্রম হয় না সেবা নিতে হলেই টেবিলে টেবিলে দিতে হয় ঘুষ, নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ চলছে প্রকাশ্য ঘুষ দুর্নীতি নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান, তার বিরুদ্ধে অতীতে অভিযোগের পাহাড় ছিল কিন্তু অবৈধ অর্থের প্রভাবে সবকিছুই অদৃশ্য করে দেন তিনি, সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরও তিনি চালিয়ে যাচ্ছে এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট ঘুষ বাণিজ্য।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কর্মকর্তা কর্মচারীরা ডুবে আছেন দুর্নীতিতে। যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ফিটনেস ড্রাইভিং লাইসেন্স মালিকালা বদল সহ যাবতীয় সেবা পেতে দিতে হয় প্রতি টেবিলে টেবিলে ঘুষ অর্থ ছাড়া হয় না কোন কাজ প্রতিদিন গ্রাহকের পকেট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, মোটরযান পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম, সাইফুল কবির, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন, উচ্চমান সহকারী কর্মচারী পিয়ন ঝাড়ুদার সবাই জড়িত ঘুষ বাণিজ্যে এবং এই সব কিছুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিন) মাহবুবুর রহমান তবে অর্থ লেনদেনের জন্য রয়েছে পাঁচ থেকে ছয় জনের একটি দালাল চক্র শরীফ সুমন রাসেল রিয়াজ আব্বাস মূলত এই দালাল চক্ররাই অর্থের লেনদেন করেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে পৌঁছে দেন ঘুষের টাকা এজন্যই কর্মকর্তা কর্মচারীরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে ম্যানেজ করেছেন এবং অধিকাংশ নিউজ প্রত্যাহার করিয়েছেন।
নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক ক গাড়ির মালিকানা বদল করতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, দালাল সুমনের কাছে আমি ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছি নাম পরিবর্তনের জন্য এবং এই টাকাটা এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে গিয়েছে কিন্তু টাকা না দিলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয় তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিয়েছি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্র বলেন বাবা শখ করে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছে কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১৭ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছি কি করব এছাড়া কোন উপায় নেই, আর এই সকল লেনদেন করা হয় সিসি ক্যামেরার বাহিরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি অর্থ নেন না, আরো অনেকে বলেন ইতিমধ্যে অনেকবার আমরা অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোন ফল পাইনি।
একাধিক অভিযোগ জমা হওয়ার পরে গত ৭ মে ২০২৫ নারায়ণগঞ্জ জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তুষার আহমেদের নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয় কিন্তু দুদক টিম অভিযানে আসার আগেই এই দুর্নীতিবাজ চক্র সতর্ক হয়ে যায় অভিযানের সময় মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না পরে তিনি আসেন কিন্তু পরিচালক মাহবুবুর রহমান ও তার সিন্ডিকেট খুবই সতর্ক যার কারণে বারবার এরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতি ঘুষ দুর্নীতি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এমন একটি অভিযোগ এসেছিল স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক বিভাগের সচিব ও সকল গণমাধ্যম বরাবর কিন্তু অবৈধ অর্থ দিয়ে সেই ঘটনা তিনি ধামাচাপা দিয়েছিলেন সেই অভিযোগে উল্লেখ ছিল :
এসএসসি দাখিল পরীক্ষার সার্টিফিকেট এ মাহবুবুর রহমানের জন্ম তারিখ ছিল ২ নভেম্বর ১৯৭৬ কিন্তু তার জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম তারিখ ২০/০২/১৯৮৩ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৯৮৩৭৯১৮০৩৪১৭৪৯৮৪।
আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সুপারিশের ২০১২ সালে বি আর টি এর বরিশাল অফিসে চাকরিতে যোগদান করেন, এরপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ঘুষ দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছে তবে নিজেকে স্বচ্ছ রাখতে ও আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য অধিকাংশ সম্পদ গুলো নিজের পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামি করেছেন সেই অভিযোগ পত্রে উল্লেখ ছিল:
১. পিতা: মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ফকির
২. বোন: মোসা: রওশন আরা আক্তার রেহেনা
৩. বোন: মোসা: তাহুরা আক্তার রিনা
৪. বোন: মোসা: চাঁদ সুলতানা
৫. ভাই: মেহেদী হাসান
৬. স্ত্রী: মুনিয়া আক্তার
৭. শশুর: পিন্টু জোয়ার্দার এবং বোনের স্বামী আরো বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা পিরোজপুর সদর থানার অন্তর্গত দেবুরকাঠি মৌজা, কলা খালি মৌজা, বাবলা কচুবুনিয়া, চল পুথুরিয়া মৌজা, ডাকাতিয়া মৌজা ও নাজিরপুর থানার সিরাম কাঠি মৌজা, জয়পুর মৌজা কাঠালতলা মৌজা সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় পুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয় করেছেন আত্মীয়স্বজনের নামে।
মাহবুবুর রহমানের ছোট ভাই কলেজ ছাত্রের নামেও রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, সকল বিআরটিএ আমাদের নজরদারিতে আছে সকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে কোন অপরাধী ছার পাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমানের ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স